SSC পদার্থবিজ্ঞান: ৩য় অধ্যায় MCQ

SSC পদার্থবিজ্ঞান: ৩য় অধ্যায় MCQ চারটি বিষয় আছে

১। নিউটনের প্রথম সূত্র কি নির্দেশ করে ব্যাখ্যা কর ।

২। নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র ব্যাখ্যা কর ।

৩। নিউটনের তৃতীয় সূত্র কি ব্যাখ্যা ক।

৪। ঘর্ষণ প্রকারভেদ প্রকারভেদ গুলো আলোচনা কর (স্তিতি ঘর্ষণ,পিছলানো ঘর্ষণ, আবর্ত ঘর্ষণ, প্রহাহী ঘর্ষণ )

উত্তরঃ

১। নিউটনের প্রথম সূত্র ব্যাখ্যা

নিউটনের প্রথম সূত্রকে নিষ্ক্রিয়তার সূত্র (Law of Inertia) বলা হয়। এটি বলে যে,

“কোনো বস্তু যদি স্থির থাকে, তবে তা স্থিরই থাকবে, এবং যদি কোনো বস্তু সরলরেখায় গতিশীল থাকে, তবে তা সেই গতিতেই চলতে থাকবে যতক্ষণ না কোনো বাহ্যিক বল তার অবস্থার পরিবর্তন ঘটায়।”

🔹 ব্যাখ্যা:
বস্তুর এই আচরণকে নিষ্ক্রিয়তা বলা হয়, কারণ বস্তু বাহ্যিক বল না লাগানো পর্যন্ত তার গতিশীলতা বা স্থিরতা পরিবর্তন করতে চায় না।

🔹 উদাহরণ:

  • বাস চলার সময় হঠাৎ ব্রেক কষলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে।
  • টেবিলের উপর রাখা বই চুপচাপ থাকে যতক্ষণ না আমরা তাকে ধাক্কা দিই।

২। নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র ব্যাখ্যা

নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র বলে যে,

“কোনো বস্তুর গতির পরিবর্তনের হার তার ভর ও প্রয়োগকৃত বলের গুণফলের সমানুপাতিক এবং বলের দিকেই ঘটে।”

🔹 গাণিতিক রূপ:F=maF = maF=ma

যেখানে,

  • FFF = বল (Newton)
  • mmm = বস্তুর ভর (kg)
  • aaa = ত্বরণ (m/s²)

🔹 ব্যাখ্যা:
কোনো বস্তুতে বল প্রয়োগ করলে সেটি একটি নির্দিষ্ট ত্বরণ অর্জন করে। বস্তুর ভর বেশি হলে একই বল প্রয়োগে কম ত্বরণ হবে, আর কম ভরের বস্তুতে বেশি ত্বরণ হবে।

🔹 উদাহরণ:

  • একটি হালকা ফুটবল এবং ভারী ক্রিকেট বলকে একই বল দিলে ফুটবল দ্রুতগতিতে এগিয়ে যায়, কিন্তু ক্রিকেট বল ধীরে এগোয়।
  • ট্রাক ও বাইক একই বল পেলে ট্রাক ধীরে চলে, কারণ এর ভর বেশি।

৩। নিউটনের তৃতীয় সূত্র ব্যাখ্যা

নিউটনের তৃতীয় সূত্র বলে যে,

“প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে।”

🔹 গাণিতিক রূপ:Faction=−FreactionF_{\text{action}} = -F_{\text{reaction}}Faction​=−Freaction​

🔹 ব্যাখ্যা:
যদি একটি বস্তু অন্য বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে, তাহলে সেই বস্তুও সমান পরিমাণ বল বিপরীত দিকে প্রয়োগ করে।

🔹 উদাহরণ:

  • রকেট চলার সময় জ্বালানি নিচে গ্যাস নির্গত করে, আর বিপরীত দিকে রকেট উপরের দিকে উঠে।
  • যদি আমরা হাত দিয়ে দেয়ালে ধাক্কা দিই, তাহলে দেয়ালও আমাদের হাতে একই পরিমাণ বল প্রয়োগ করে।

৪। ঘর্ষণের প্রকারভেদ

ঘর্ষণ হল দুটি বস্তুর সংস্পর্শে আসার ফলে তাদের মধ্যে উৎপন্ন বিরোধী বল, যা গতিকে প্রতিহত করে। এটি প্রধানত চার প্রকারের হয়:

(ক) স্তিতি ঘর্ষণ (Static Friction)

যে ঘর্ষণ বল কোনো বস্তুকে স্থির রাখার জন্য কাজ করে, তাকে স্তিতি ঘর্ষণ বলে।
🔹 উদাহরণ: ভারী টেবিল সরানোর চেষ্টা করলে প্রথমে বেশি বল দিতে হয়, কারণ তখন স্তিতি ঘর্ষণ কাজ করে।

(খ) পিছলানো ঘর্ষণ (Sliding Friction)

যখন একটি বস্তু অন্য বস্তুর উপর পিছলে চলে, তখন যে ঘর্ষণ বল কাজ করে, তাকে পিছলানো ঘর্ষণ বলে।
🔹 উদাহরণ: বরফের উপর দিয়ে হাঁটা কঠিন, কারণ পিছলানো ঘর্ষণ কম থাকে।

(গ) আবর্ত ঘর্ষণ (Rolling Friction)

যখন একটি বস্তু অন্য বস্তুর উপর গড়িয়ে চলে, তখন যে ঘর্ষণ বল কাজ করে, তাকে আবর্ত ঘর্ষণ বলে।
🔹 উদাহরণ: গাড়ির টায়ার ঘোরার সময় রাস্তার সাথে যে বল অনুভূত হয়, সেটি আবর্ত ঘর্ষণ।

(ঘ) প্রহাহী ঘর্ষণ (Fluid Friction)

যখন কোনো বস্তু তরল বা গ্যাসের মধ্য দিয়ে চলে, তখন যে ঘর্ষণ বল কাজ করে, তাকে প্রহাহী ঘর্ষণ বলে।
🔹 উদাহরণ: বাতাসে বিমানের চলার সময় বায়ুর প্রতিরোধ অনুভূত হয়, যা প্রহাহী ঘর্ষণ।

Leave a Comment