SSC Biology Chapter 1 CQ
Type 1
(a) দ্বিপদ নামকরনী পদ্ধতি
দ্বিপদ নামকরনী (Binomial Nomenclature) হল জীবের বৈজ্ঞানিক নামকরণের একটি পদ্ধতি, যা সুইডিশ বিজ্ঞানী কার্ল লিনিয়াস (Carl Linnaeus) ১৭৫৩ সালে প্রবর্তন করেন। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি জীবের বৈজ্ঞানিক নাম দুটি শব্দে গঠিত হয়—প্রথমটি গণ (Genus) এবং দ্বিতীয়টি প্রজাতি (Species)।
দ্বিপদ নামকরনী পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য:
- দুটি অংশ নিয়ে গঠিত:
- প্রথম অংশ গণের নাম (Genus) এবং এটি প্রথম অক্ষর বড় হাতের (Capital letter) হয়।
- দ্বিতীয় অংশ প্রজাতির নাম (Species) এবং এটি সম্পূর্ণ ছোট হাতের (Small letter) লেখা হয়।
- ল্যাটিন বা গ্রিক ভাষায় লেখা হয়:
- কারণ ল্যাটিন একটি নির্দিষ্ট এবং সর্বজনীন ভাষা, যা পরিবর্তন হয় না।
- হাতের লেখায় নামের নিচে দাগ দেয়া হয় এবং মুদ্রিত লেখায় Italic (বাঁকা) করা হয়:
- যেমন: Homo sapiens (মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম)
- একই নাম পৃথিবীর সকল বিজ্ঞানী ব্যবহার করেন:
- এতে বৈজ্ঞানিক যোগাযোগ সহজ হয়।
দ্বিপদ নামকরনী পদ্ধতির গুরুত্ব:
- একই প্রাণী বা উদ্ভিদের বিভিন্ন ভাষায় ভিন্ন নাম থাকতে পারে, কিন্তু বৈজ্ঞানিক নাম এক ও অভিন্ন।
- নামকরণের মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও শ্রেণিবিন্যাস সহজ হয়।
- এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি পদ্ধতি।
উদাহরণ:
সাধারণ নাম | বৈজ্ঞানিক নাম |
---|---|
মানুষ | Homo sapiens |
আম | Mangifera indica |
কুকুর | Canis lupus |
(b) জীবজগতের রাজ্য সম্পর্কে আলোচনা কর।
জীবজগতের রাজ্য (Kingdom of Living Organisms)
জীববিজ্ঞানীরা জীবদের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করেছেন। আধুনিক শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতিতে জীবজগতকে পাঁচটি রাজ্যে ভাগ করা হয়েছে, যা রবার্ট হুইটেকার (Robert Whittaker) ১৯৬৯ সালে প্রস্তাব করেন।
পাঁচটি রাজ্য ও তাদের বৈশিষ্ট্য
১. মনেরা (Monera)
🔹 উদাহরণ: ব্যাকটেরিয়া (Bacteria), নীল-সবুজ শৈবাল (Cyanobacteria)
🔹 বৈশিষ্ট্য:
- এককোষী (Unicellular) এবং প্রোক্যারিওটিক (Prokaryotic)
- কোষের নিউক্লিয়াস সুগঠিত নয় (কোষীয় অঙ্গাণু অনুপস্থিত)
- অঙ্গপ্রত্যঙ্গহীন সরল গঠন
- কিছু উপকারী ও কিছু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া রয়েছে
২. প্রোটিস্টা (Protista)
🔹 উদাহরণ: অ্যামিবা (Amoeba), ইউগ্লিনা (Euglena), প্যারামেসিয়াম (Paramecium)
🔹 বৈশিষ্ট্য:
- এককোষী, কিন্তু ইউক্যারিওটিক (Eukaryotic)
- নিউক্লিয়াস সুগঠিত
- কিছু স্বপোষী (Autotrophic) এবং কিছু পরপোষী (Heterotrophic)
- সাধারণত জলজ পরিবেশে বসবাস করে
৩. ফানজাই (Fungi)
🔹 উদাহরণ: ইস্ট (Yeast), মাশরুম (Mushroom), পেনিসিলিয়াম (Penicillium)
🔹 বৈশিষ্ট্য:
- এককোষী বা বহুকোষী হতে পারে
- ইউক্যারিওটিক
- অধিকাংশ পরপোষী (Heterotrophic) – মৃতজীবী বা পরজীবী
- কোষপ্রাচীর বিদ্যমান, যা কাইটিন (Chitin) দিয়ে তৈরি
৪. প্লান্টি (Plantae) – উদ্ভিদ রাজ্য
🔹 উদাহরণ: আম (Mangifera indica), ধান (Oryza sativa), নারকেল (Cocos nucifera)
🔹 বৈশিষ্ট্য:
- বহুকোষী (Multicellular) এবং ইউক্যারিওটিক
- স্বপোষী (Autotrophic) – সালোকসংশ্লেষণ করতে সক্ষম
- কোষপ্রাচীর বিদ্যমান, যা সেলুলোজ (Cellulose) দিয়ে তৈরি
- স্থির জীবনধারা
৫. অ্যানিমেলিয়া (Animalia) – প্রাণী রাজ্য
🔹 উদাহরণ: মানুষ (Homo sapiens), কুকুর (Canis lupus), ব্যাঙ (Rana tigrina)
🔹 বৈশিষ্ট্য:
- বহুকোষী এবং ইউক্যারিওটিক
- পরপোষী (Heterotrophic) – খাদ্য গ্রহণ করে বেঁচে থাকে
- কোষপ্রাচীর নেই
- চলাচল করতে সক্ষম
Type 2
জীবজগতের রাজ্য সম্পর্কে আলোচনা কর।
জীবজগতের পাঁচটি রাজ্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ
রাজ্যের নাম | কোষের সংখ্যা | কোষের গঠন | খাদ্য গ্রহণ পদ্ধতি | কোষপ্রাচীর | উদাহরণ |
---|---|---|---|---|---|
মনেরা (Monera) | এককোষী (Unicellular) | প্রোক্যারিওটিক (Prokaryotic), নিউক্লিয়াস সুগঠিত নয় | স্বপোষী বা পরপোষী উভয়ই হতে পারে | পেপটিডোগ্লাইকান দ্বারা তৈরি | ব্যাকটেরিয়া (Escherichia coli), নীল-সবুজ শৈবাল (Cyanobacteria) |
প্রোটিস্টা (Protista) | এককোষী (Unicellular) | ইউক্যারিওটিক (Eukaryotic), নিউক্লিয়াস সুগঠিত | স্বপোষী বা পরপোষী উভয়ই হতে পারে | কিছুতে নেই, কিছুতে সেলুলোজ | অ্যামিবা (Amoeba), প্যারামেসিয়াম (Paramecium), ইউগ্লিনা (Euglena) |
ফানজাই (Fungi) | এককোষী বা বহুকোষী | ইউক্যারিওটিক, নিউক্লিয়াস সুগঠিত | পরপোষী (মূলত মৃতজীবী বা পরজীবী) | কাইটিন দ্বারা তৈরি | মাশরুম (Agaricus), ইস্ট (Saccharomyces), পেনিসিলিয়াম (Penicillium) |
প্লান্টি (Plantae) | বহুকোষী (Multicellular) | ইউক্যারিওটিক, নিউক্লিয়াস সুগঠিত | স্বপোষী (সালোকসংশ্লেষণ) | সেলুলোজ দ্বারা তৈরি | আম (Mangifera indica), ধান (Oryza sativa), শাপলা (Nymphaea) |
অ্যানিমেলিয়া (Animalia) | বহুকোষী (Multicellular) | ইউক্যারিওটিক, নিউক্লিয়াস সুগঠিত | পরপোষী (Heterotrophic) | অনুপস্থিত | মানুষ (Homo sapiens), কুকুর (Canis lupus), সিংহ (Panthera leo) |
সংক্ষেপে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
✅ মনেরা: প্রোক্যারিওটিক এককোষী জীব, যেমন ব্যাকটেরিয়া।
✅ প্রোটিস্টা: এককোষী ইউক্যারিওটিক জীব, যেমন অ্যামিবা, ইউগ্লিনা।
✅ ফানজাই: মৃতজীবী বা পরজীবী, কোষপ্রাচীর কাইটিন দিয়ে তৈরি, যেমন মাশরুম।
✅ প্লান্টি: স্বপোষী, সালোকসংশ্লেষণ করতে পারে, কোষপ্রাচীর সেলুলোজ দিয়ে তৈরি।
✅ অ্যানিমেলিয়া: পরপোষী, চলাচল করতে সক্ষম, কোষপ্রাচীর নেই।