কোরআন বাইবেল বেদ ও বিজ্ঞান
কোরআন বাইবেল বেদ ও বিজ্ঞান comparative religion zakir naik bangla নিয়ে লেকচার প্রথম আমরা যার কাছে জানতে পারি তিনি হলেন এই প্রজন্মের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইসলামিক স্কলার Dr Zakir Naik ( জাকির নায়েক ) এর কাছ থেকে। এই (Comparative Religion) বিষয়ের জন্য আমি মনে করি তিনি এক জীবন্ত কিংবদন্তী।
সব ধর্মেই কিছু মৌলিক নীতি এবং শিক্ষা পাওয়া যায় যা মানুষের নৈতিকতা, আধ্যাত্মিকতা এবং সামাজিক কল্যাণকে উন্নত করার লক্ষ্যে প্রচারিত। নিচে কোরআন, বাইবেল, বেদ এবং বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এমন ১০টি বিষয় তুলে ধরা হলো যা সব ধর্মেই আছে:
১. এক ঈশ্বরের ধারণা
- কোরআন: “তোমার প্রভু একমাত্র আল্লাহ; তিনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই।” (সূরা বাকারাহ ২:১৬৩)
- বাইবেল: “আমি প্রভু, আর কেউ নেই; আমি একমাত্র ঈশ্বর।” (ইসাইয়াহ ৪৫:৫)
- বেদ: “একং সদ্বিপ্রা বহুধা বদন্তি” (সত্য এক, জ্ঞানীরা তাকে বিভিন্ন নামে ডাকে)। (ঋগ্বেদ ১.১৬৪.৪৬)
- বিজ্ঞান: মহাবিশ্বের সৃষ্টির পেছনে একক শক্তি বা সূত্র থাকার ধারণা বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণায় প্রকাশিত।
২. মানবিকতা ও করুণা
- কোরআন: “যে ব্যক্তি একটি প্রাণ বাঁচায়, সে যেন পুরো মানবজাতিকে বাঁচাল।” (সূরা মায়েদাহ ৫:৩২)
- বাইবেল: “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালোবাসো।” (ম্যাথিউ ২২:৩৯)
- বেদ: “সর্বজন হিতায়, সর্বজন সুখায়।”
- বিজ্ঞান: সহানুভূতি এবং সহযোগিতা মানবজাতির উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৩. সত্যবাদিতা
- কোরআন: “সত্য কথা বলো, যদিও তা তোমার বিপক্ষে যায়।” (সূরা আন-নিসা ৪:১৩৫)
- বাইবেল: “সত্য তোমাকে মুক্ত করবে।” (জন ৮:৩২)
- বেদ: “সত্যমেব জয়তে” (সত্যেরই বিজয় হয়)। (মুন্ডক উপনিষদ ৩.১.৬)
- বিজ্ঞান: সত্যতা বিজ্ঞান গবেষণার মূল ভিত্তি।
৪. ন্যায় ও নীতিবোধ
- কোরআন: “আল্লাহ ন্যায়বিচার, সৎকর্ম এবং আত্মীয়দের সহায়তার আদেশ দেন।” (সূরা নাহল ১৬:৯০)
- বাইবেল: “ন্যায়পরায়ণতার পথে হেঁটো।” (প্রবচন ২১:৩)
- বেদ: “ঋতং চ সত্যং চ।” (ন্যায় ও সত্য উভয়ই সবার মঙ্গলের জন্য।)
- বিজ্ঞান: সামাজিক ন্যায়বিচার উন্নত সমাজের জন্য অপরিহার্য।
৫. ধৈর্য ও সহনশীলতা
- কোরআন: “নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যধারীদের সাথে আছেন।” (সূরা বাকারা ২:১৫৩)
- বাইবেল: “ধৈর্য হল আত্মার শান্তি।” (গালাতীয় ৫:২২)
- বেদ: ধৈর্যকে উত্তম গুণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
- বিজ্ঞান: ধৈর্য ধীরে-ধীরে সমস্যা সমাধান ও মানসিক শান্তি আনে।
৬. জ্ঞানার্জন
- কোরআন: “জ্ঞান অনুসন্ধান করা প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব।” (সহীহ বুখারি)
- বাইবেল: “জ্ঞান সর্বোৎকৃষ্ট সম্পদ।” (প্রবচন ৪:৭)
- বেদ: “জ্ঞান মানুষকে মুক্ত করে।” (ঋগ্বেদ ১০.৭১.৩)
- বিজ্ঞান: জ্ঞানের অগ্রগতি সভ্যতার ভিত্তি।
৭. ক্ষমাশীলতা
- কোরআন: “ক্ষমা করো এবং তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হও।” (সূরা তাগাবুন ৬৪:১৪)
- বাইবেল: “যে ক্ষমা করে, সে ভালোবাসা প্রকাশ করে।” (প্রবচন ১৭:৯)
- বেদ: ক্ষমা সৃষ্টিকর্তার গুণ।
- বিজ্ঞান: ক্ষমাশীলতা মানসিক শান্তি আনয়ন করে।
৮. পরিবার ও সমাজের গুরুত্ব
- কোরআন: “আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদাচরণ কর।” (সূরা নিসা ৪:৩৬)
- বাইবেল: “তোমার পিতা-মাতাকে সম্মান কর।” (প্রস্থান ২০:১২)
- বেদ: “মাতৃদেবো ভব, পিতৃদেবো ভব।”
- বিজ্ঞান: সামাজিক বন্ধন মানবিক উন্নয়নের ভিত্তি।
৯. দানের গুরুত্ব
- কোরআন: “যারা সম্পদ দান করে গোপনে এবং প্রকাশ্যে, তাদের জন্য পুরস্কার আছে।” (সূরা বাকারা ২:২৭৪)
- বাইবেল: “দান করা সুখের।” (প্রেরিত ২০:৩৫)
- বেদ: দানকেই সৃষ্টিকর্তার প্রতি শ্রদ্ধা হিসেবে ধরা হয়।
- বিজ্ঞান: পরোপকার সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে।
১০. শান্তি ও অহিংসা
- কোরআন: “শান্তির পথে অগ্রসর হও।” (সূরা বাকারা ২:২০৮)
- বাইবেল: “শান্তি স্থাপনকারীরা ধন্য।” (ম্যাথিউ ৫:৯)
- বেদ: “অহিংসা পরম ধর্ম।”
- বিজ্ঞান: সহিংসতাহীন পরিবেশে উন্নয়ন সহজ হয়।
এই ১০টি নীতির মূল শিক্ষা একই: মানবজীবনের উন্নতি ও শান্তি। সব ধর্ম এবং বিজ্ঞান একে অপরকে সম্পূরক হিসেবে কাজ করে।